আয়াতুল কুরসী ও সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত

আয়াতুল কুরসী  কুরআন মাজীদের সর্বমহান আয়াত।আয়াতুল কুরসী সূরা আল বাক্বারাহ’র ২৫৫ নং আয়াত।আয়াতুল কুরসীতে যা বর্ণিত হয়েছে  তা কুরআনের অন্য কোনো একটি আয়াতেও তা হয় নি; বরং আল্লাহ তা‘আলা সূরা হাদীদের শুরুতে এবং সূরা হাশরের শেষে একাধিক আয়াতে তা বর্ণনা করেন, একটি আয়াতে নয় ।তাই আয়াতুল কুরসি আল কুরআনের সর্বমহান আয়াত ।


আয়াতুল কুরসী


بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ




উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল-কাইয়্যুম লা তা'খুজুহু সিনাতু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিছছামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদি মানজাল লাজি ইয়াশফায়ু ইনদাহু ইল্লা বিইজনিহ । ইয়া'লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খলফাহুম, ওয়ালা ইউহিতুনা বিশাইয়িম মিন ইলমিহি- ইল্লা বিমা শা-য়া। অছিয়া কুরসিয়্যিহুছ ছামাওয়াতি অল আরদা ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওহুয়াল আলিয়্যুল আজিম।


অর্থ ঃ পরম দাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি ।
আল্লাহ ব্যতীত কোনই উপাস্য নেই । যিনি চির জীবন্ত ও সদা বিরাজমান। তন্দ্রা এবং নিদ্রা তাকে স্পর্শ করতে পারে না। নভোমন্ডলে যা কিছু আছে এবং ভূমন্ডলে যা কিছু আছে সব তাঁরই সৃষ্টি। এমন কে আছে যে তার অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে। তাদের পশ্চাতে যা কিছু রয়েছে এবং তাদের সম্মুখে যা কিছু রয়েছে তিনি তা পরিজ্ঞাত আছেন। তিনি যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত তাঁর অনন্ত জ্ঞানের কোন বিষয়ই কেউ ধারণা করতে সক্ষম নয়। তাঁর আসন ও সাম্রাজ্য, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল পরিব্যপ্ত হয়ে রয়েছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাকে বিব্রতবোধ করতে হয় না, আর তিনি সমুন্নত ও মহীয়ান।


ফজিলত ঃ

১. প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)  বলেছেন: যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার মৃত্যুর সময় সহজভাবে জান কবজ করা হবে। 

২. অন্য হাদিসে আছে, যারা পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তাদের জন্যে জান্নাতে যেতে মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো বাধা থাকবে না। অর্থাৎ মৃত্যুর সাথে সাথেই সেই ব্যক্তি আল্লাহর জান্নাতের শান্তি উপভোগ করতে থাকবে।

৩. হাদিসে বলা আছে, যে ব্যক্তি ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, আল্লাহ তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করে দিবেন এবং সে ফেরেশতা সারা রাত তাকে পাহারা দিবে এবং দুষ্ট জীন ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবে।
৪. রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি পাঠ করে তার ধন-সম্পতি ফুঁকে দেয় তাহলে তার ওই সম্পদ কোনো চোরে নিতে পারবে না।
এ বিষয় একটি ঘটনা হযরত আবু হুরায়রা (র) থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেনঃ একবার রসূলুল্লাহ (সঃ) আমাকে কিছু সম্পদ পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দিলেন। আমি পাহারা দিচ্ছিলাম এমন সময় ঘুম আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। আমি তখন আয়াতুল কুরসি পড়ে ওই সম্পদে ফুঁক দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। তখন চোর এলো সম্পদগুলো চুরি করার জন্যে। কিন্তু চোর ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেলো। 

৫. যারা আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে আল্লাহ তাদের জান্নাতের আটটি দরজার সবগুলো দিয়ে প্রবেশ করার সুযোগ দিবেন।



সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত 


                                        بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ 




উচ্চারণ ঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
হুওয়াল্লা-হুল্লাযী লা-ইলা-হা ইল্লাহু, আ-লিমুল গাইবি ওয়াশ শাহাদাতি হুওয়ার রহমানুর রহীম। হুওয়াল্লা-হুল্লাযী লা-ইলা-হা ইল্লাহু, আল মালিকুল কুদ্দুছুছ ছালামুল মু'মিনুল মুহাইমিনুল আযীযুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির, সুবহানাল্লাহি আম্মা-ইয়ুশরিকুন।হুয়াল্লা-হুল খালিকুল বা-রিউল মুসাওবিরু লাহুল আছমা-উল হুছনা-ইউছাব্বিহু লাহু মা-ফিছ ছামা ওয়াতি ওয়াল আরদ, ওয়াহুয়াল আযীযুল হাকীম। 

অর্থ ঃ  পরম দাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি ।
তিনি আল্লাহ্‌ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তিনি দৃশ্য-অদৃশ্যকে জানেন। তিনি দাতা ও দয়ালু। তিনিই মালিক, পবিত্র শান্তি ও নিরাপত্তা, আশ্রয়দাতা পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মহাত্মাশীল। তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা থেকে পবিত্র। তিনিই সৃষ্টির উদ্ভাবক সবাই তাঁর তাসবীহ পড়ে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।


ফজিলত ঃ

নবী করিম (স) বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে তিনবার  "আউযুবিল্লাহিছ ছামিয়িল আলিমী মিনাশ শাইত্বানির  রাজীম" পড়বে, অতঃপর সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত একবার পাঠ করবে, আল্লাহ তার জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করে দেন, যারা সন্ধ্যা পর্যন্ত ঐ ব্যক্তির জন্য তওবা করতে থাকে, সেদিন যদি তার মৃত্যু হয়, তাহলে সে ব্যক্তি শহীদি মৃত্যু লাভ করবে। এভাবে সন্ধ্যায় একই নামে যে পাঠ করবে, সে ব্যক্তিও উক্ত মরতবা লাভ করবে। সে রাত্রি বেলা মৃত্যুবরণ করলে শহীদি দরজা লাভ করবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ